সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

‘গান গেয়ে গেয়ে’এক যুবককে মারছেন তরুণেরা, পরে লাশ উদ্ধার।

খুঁটিতে দুই হাত বেঁধে শাহাদাত হোসন নামের এক যুবককে মারধর করছে একদল তরুণ। গত শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ভিডিওটি ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া।

চট্টগ্রামে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে এক যুবককে পিটিয়ে মারার একটি ২০ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল শনিবার ফেসবুকে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, এক যুবককে উড়ালসড়কের নিচে দুটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। এ সময় গান গেয়ে তাঁকে মারধর করছেন কয়েকজন তরুণ। ঘটনাটি গত ১৪ আগস্টের হলেও জানাজানি হয় গতকাল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যাঁকে মারধর করা হচ্ছে, ওই যুবকের নাম মো. শাহাদাত হোসেন (২৪)। যে স্থানে তাঁকে বেঁধে রাখা হয়েছিল, সেটি চট্টগ্রাম নগরের আখতারুজ্জামান উড়ালসড়কের নিচে ২ নম্বর গেট মোড় এলাকা। ১৪ আগস্ট রাতে নগরে প্রবর্তক এলাকা থেকে পুলিশ শাহাদাতের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পরদিন শাহাদাতের চাচা মো. হারুন বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। কিন্তু কেন এ হত্যাকাণ্ড কিংবা কার সঙ্গে বিরোধ, তা এজাহারে উল্লেখ নেই।
পুলিশ জানায়, ১৪ আগস্ট রাতে প্রবর্তক এলাকা থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর চাচা ফেসবুকে লাশের ছবি দেখে থানায় এসে মামলা করেন। তবে মারধরের শিকার ব্যক্তি যে শাহাদাত, সেটি জানা গেছে গতকাল তাঁর স্ত্রী ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে শনাক্ত করা পর।

মো. শাহাদাত হোসেন নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি থানাধীন পাঁচবাড়িয়া ইউনিয়নের নদনা গ্রামের মিয়া জান ভূঁইয়াবাড়ির মৃত মোহাম্মদ হারুনের ছেলে। থাকতেন নগরের কোতোয়ালি থানাধীন বিআরটিসি এলাকার বয়লার কলোনিতে। তিনি নগরের ফলমণ্ডির একটি দোকানে চাকরি করতেন।
এজাহারে নিহত শাহাদাতের চাচা মো. হারুন উল্লেখ করেন, ১৩ আগস্ট বেলা দুইটার দিকে কর্মস্থলের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন শাহাদাত। সন্ধ্যা সাতটার দিকে ফোন করলে কিছুক্ষণের মধ্যে বাসায় চলে আসবেন বলে তাঁর স্ত্রীকে জানান শাহাদাত। গভীর রাত পর্যন্ত স্বামী বাসায় ফিরে না আসায় খোঁজাখুঁজি করেন শারমিন। এ সময় শাহাদাতের মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

১৪ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফেসবুকে বাদী দেখতে পান, নগরের প্রবর্তক মোড়ের অদূরে বদনা শাহ মিয়া (রহ.) মাজারের বিপরীতে সড়কের পাশে তাঁর ভাতিজা শাহাদাত হোসেনের মৃতদেহ পড়ে আছে। পরে এদিন রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে শাহাদাতের লাশ শনাক্ত করে তাঁর স্ত্রী শারমিন আক্তার ও বাদী।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান প্রথম আলোকে বলেন, ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর শাহাদাতের স্ত্রী মারধরের শিকার ব্যক্তি শাহাদাত বলে নিশ্চিত করেছেন। তবে যাঁরা মারধর করছেন, তাঁদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। তাঁদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: